আলহামদুলিল্লাহ ওয়াস সালামু আলা রসুলিল্লাহ। ওয়া আলা আলিহী ওয়া আসহাবিহী ওয়া মান ওয়ালাহ। হেরা গুহায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সর্বপ্রথম যে ওহি নাজিল হয় তা হচ্ছে- পড়ুন আপনার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্তপিণ্ড থেকে। নিশ্চয় আপনার প্রতিপালক মহান দয়ালু। যিনি শিক্ষা দিয়েছেন কলমের মাধ্যমে। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে, যা সে জানত না (সুরা : আলাক, আয়াত নং : ১-৫)। দুনিয়ার নিয়ম ও ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখার জন্য যেমন জাগতিক শিক্ষার প্রয়োজন, তেমনি দ্বীনের হেফাজতের জন্য এবং দুনিয়ার সব কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টি মোতাবেক হওয়ার জন্য দ্বীনি শিক্ষার প্রয়োজন। মুসলিম সমাজের সব শ্রেণির মানুষ যেন দ্বীন মোতাবেক চলতে পারে এবং হারাম থেকে বেঁচে হালালভাবে জীবনযাপন করতে পারে, সে জন্য কোরআন-সুন্নাহে পারদর্শী একটি জামায়াত বিদ্যমান থাকা অপরিহার্য। কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, কেন বের হয় না প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে একটি দল, যাতে তারা দ্বীনের তাফাক্কুহ অর্জন করে এবং ভীতি প্রদর্শন করে তাদের জাতিকে যখন তারা ফিরে আসে তাদের কাছে। সম্ভবত তারা আল্লাহভীতি অর্জন করবে (সুরা তাওবা, আয়াত নং : ১২২)। জ্ঞান চর্চার নানামুখী সুযোগ উন্মুক্ত করার অভিপ্রায়ে আইওএম (IOM) আলিম কোর্সের পাশাপাশি দিচ্ছে অনেকগুলো শর্ট কোর্সের অফার।

আইওএম ইতিহাস

২০১৮ সালের কথা গল্পের শুরুতে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানের দুজন মুসাফিরের কথা বলেছিলাম মনে আছে নিশ্চয়। জ্বি। তাদের একজন হলেন মুফতি জুবায়ের আহমাদ ও আরেকজন ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মারছুছ। মুফতি জুবায়ের আহমাদ একজন বিখ্যাত আলেম ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের উপর গবেষক এবং বিশিষ্ট দায়ী, যিনি তার দাওয়াতি কর্মপন্থা কাজে লাগিয়ে বহু অমুসলিমকে ইসলামের নূর দেখিয়ে মুসলিম হতে সাহায্য করেছেন, যার জবানের প্রতিটি শব্দ অন্তরে সুকূন ঢেলে দেয়, উম্মতের মাঝে দ্বীনের দরদকে জাগিয়ে তোলে। অন্যদিকে ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মারছুছ হলেন আইটি ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিজনেস ম্যানেজমেন্টের উপর Post - Graduate করা একজন শিক্ষিত মেধাবী মানুষ, যার মস্তিষ্কে সর্বক্ষণ উম্মতের হিকমতের জন্যে নিত্যনতুন পরিকল্পনা, উদ্যোগ, কর্মপ্রচেষ্টা লেগে থাকে। নিজের জাগতিক জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে দ্বীনের বিপ্লব ঘটানো যায় সেই পরিকল্পনা চলতে থাকে। মা শা আল্লাহ। উভয়কে নিয়ে যত বলা যাবে কম হবে। উভয়ই আপডেট জেনারেশনের মাঝে দ্বীনের ফিকির বাড়ানোর চিন্তায় সর্বদা মশগুল। দ্বীনি স্বার্থে তাদের এই উৎসর্গ আরশে আযীমে পৌছে যাক এই দুয়া সর্বক্ষণ।

এই দুটি নেক রুহের সম্মিলিত উদ্যোগে আজ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে Islamic Online Madrasah-IOM এর মত জনপ্রিয় প্লাটফর্ম। এই দুজন মানুষের শিক্ষাগত যোগ্যতা ভিন্ন ভিন্ন হলেও নিয়্যাত ও অন্তরের কোণে লুকায়িত তামান্নাগুলো ছিলো পুরোপুরি এক। নিঃস্বার্থে উম্মাহর মাঝে দ্বীনের দাওয়াহ প্রদান। রব্ব হয়তো ঠিক একারনেই দুজনের অবস্থানের ভিন্নতা রেখেছেন যাতে উভয়ের মেলবন্ধনে সোনায় সোহাগা করতে পারেন। যেকোন বয়সের, যেকোন শ্রেনী ও পেশার, যেকোন মাজহাব বা মানহাজের মানুষের দোরগোড়ায় যেন আল-ফুরক্বানের প্রতিটি বানী পৌছে যেতে পারে, হিদায়াতের বানীগুলো যেন দাওয়াতে রূপ নিতে পারে সেজন্য গঠন করা হয়েছে Islamic Online Madrasah-IOM নামে একটি অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার। এটি মূলত দ্বীনের দাওয়াহ প্লাটফর্ম। IOM প্রত্যেকটি মতাদর্শের প্রতি সমানভাবে শ্রদ্ধাশীল। মাজহাব-মানহাজের কোন একটি নির্দিষ্ট দলকে প্রমোট করা এর উদ্দেশ্য নয়।

IOM প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মদীনার মাসজীদে নববীতে ১লা মহররম ১৪৪০ (১১-সেপ্টেম্বর-২০১৮) উদ্বোধন হয় (যদিও এই ওয়েবসাইটটি তৈরী করা হয়: ১৭-অক্টোবর-২০১৭)। আলিম কোর্সের সিলেবাস পরিকল্পনাও মাসজিদে নববীতে বসেই সম্পন্ন করা হয়েছিলো আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ পাকের এক বিশেষ অনুগ্রহ যে তিনি IOM এর সফরটা শুরু করেছিলেন সবচেয়ে পবিত্র সময়ের সবচেয়ে পবিত্র স্থান হতে! সুবহানাল্লাহ!

আমাদের মাদ্রাসার প্রথম ব্যাচ শুরু হয় ২০১৮ সালে। প্রথম ব্যাচে ভর্তি হন ১৩২ জন স্টুডেন্ট! যাদের মধ্যে ১৬/১৭ জন ছিলেন এমবিবিএস ডাক্তার, ২২ জনের মত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার এবং বিভিন্ন দেশের স্টুডেন্টও ভর্তি হন আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ শুরুর দিক থেকে এখনো পর্যন্ত আমরা ভাই-বোনদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে আমাদের ৫টি ব্যাচ রানিং আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ পাকের অশেষ বারাকাতে আজ Islamic Online Madrasah-IOM ক্রমশঃ চলছে আলোর পাণে … তার নিজস্ব গতিতে … নিজস্ব আঙ্গিকে। সর্বশেষে সকল প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু তা’লার, যিনি আমাদের দ্বীনি ইল্ম অর্জনের জন্য এতবড় সুযোগ করে দিয়েছেন, IOM কে প্রতিটি নেক রূহে মহব্বতের জায়গা বানিয়ে দিয়েছেন। যে রুহগুলো দ্বীনি ইল্মের তালাশে চাতকপাখির ন্যায় বিচরণ করে বেড়ায়, দলাদলি থেকে সম্পূর্ণ দূরে ও হকপন্থী কোন প্লাটফর্ম তালাশ করে, তাদের তৃষ্ণা মেটাতে সুকূনের সাগরে রূপ নিয়েছে আমাদের IOM. IOM এখন ত্বলিবে ইল্মদের কাছে একটি ভালোবাসার নাম। মহান আল্লাহ পাক এই একাডেমীকে বৃহৎ হতে আরো বৃহত্তরে রূপান্তরিত করুন, এবং এই মহান কাজের পিছনে যারা যারা খিদমতে আছেন তাদের সকলকে উত্তম জাযা দিন, সকলের সদকায়ে জারিয়াহর পথ উন্মুক্ত করে দিন ও সকলকে তার দ্বীনের পথে কবুল করে নিন। আমীন।

প্রশ্নোত্তর

IOM কি কোন দল বা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান?

না, এটা সম্পূর্ন অরাজনৈতিক একটি প্রতিষ্ঠান। যেটা কোন বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর না। কিন্তু সাবজেক্টের প্রয়োজনে যে শিক্ষকবৃন্দ ক্লাশ নিবেন উনারা হয়ত কখনও কওমি আলেম কিংবা সালাফী আলেম কিংবা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলার হতে পারেন। ক্লাশের বিষয়গুলো কোরআন ও হাদীস অনুসরন করেই পড়ানো হবে ইনশাআল্লাহ।

IOM থেকে কি আমি দাওরায় হাদিস পরীক্ষা দিতে পারব?

IOM এর আলিম প্রস্তুতিমূলক কোর্সে হুবহু কওমি মাদ্রাসার সিলেবাস অনুসরণ করা হয়নি। বরং একজন জেনারেল ব্যাকগ্রাউন্ডের ভাই-বোনের জন্য যা কিছু দরকার, ৩ বছরে তার সবটুকুই একসাথে করার চেষ্টা করার হয়েছে। আইওএম এর সিলেবাস শেষ করার পর আপনি ইনশাআল্লাহ কওমি মাদ্রাসার কুদুরী জামাতে ভর্তি হতে পারবেন। আর কওমি মাদ্রাসার সিলেবাস অনুযায়ী পরবর্তী চার বছরে চারটি জামাত শেষ করতে হবে। ১। কুদুরী ২। হেদায়া ৩। মেশকাত ৪। দাওরা

অর্থাৎ আপনি আলিম প্রস্তুতি মূলক কোর্স এর ৩ বছর শেষ করার পর আরও ৪ বছর অফলাইন মাদ্রাসায় পড়লে দাওরায় হাদিস পরীক্ষা দিতে পারবেন। আর এই পড়াশোনার জন্য আপনি আমাদের নির্ধারিত কিছু মাদ্রাসায়ও ভর্তি হতে পারবেন অথবা অন্য যেকোন মাদ্রাসায় ভর্তি হতে চাইলে আমাদের মাদ্রাসা থেকে চিঠি নিয়ে ভর্তি হতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। এজন্যও IOM ইনশাআল্লাহ আপনাকে সবধরনের সাহায্য করবে।

মেয়েদের কি নিকাব পড়ে ক্লাশ করতে হবে? ছেলেমেয়ে কি একত্রে ক্লাস করবে?

না, ক্লাশের জন্য নিকাব পড়া লাগবে না। কারন কোন স্টুডেন্টের ভিডিও টিচার বা অন্য কোন স্টুডেন্ট দেখবে না। শুধুমাত্র টিচারের ভিডিও এবং লেকচার কিংবা স্লাইড সবাই দেখবেন। আর তাজবীদ ক্লাশে উচ্চারন শোনার জন্য বোনদের আলাদা বোন মুক্বররিরাহর মাধ্যমে বিভিন্নগ্রুপ করে দেওয়া হবে যার ফলে মেয়েদের কন্ঠ শুধু মেয়েরাই শুনবে । অন্যদিকে সব স্টুডেন্ট ক্লাশে প্রবেশের সময় তার রোল/ স্টুডেন্ট আইডি দিয়ে জয়েন করবে। কেউ নাম দিয়ে জয়েনন করবে না। ফলে কে ছেলে কে মেয়ে এইটা কেউ স্পেসিফিক্যালি আইডিয়া করতে পারবে না।

উদ্যেশ্য

আইওএম(IOM) বাংলা ভাষায় ইসলামী শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জনের একটি উন্মুক্ত ই-লার্নিং প্লাটফর্ম। মসজীদে নববীতে ১লা মহররম ১৪৪০(১১-সেপ্টেম্বর-২০১৮) উদ্বোধন হয় । যদিও এই ওয়েবসাইটটি তৈরী করা হয়: ১৭-অক্টোবর-২০১৭। মসজীদে নববীতে ১লা মহররম ১৪৪০(১১-সেপ্টেম্বর-২০১৮) উদ্বোধন হয় । ইসলামিক অনলাইন মাদ্রাসার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলোর মধ্য রয়েছে:-

  • সকল বয়সী মুসলিমদের জন্য শিক্ষা হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়া।


  • প্রতিটি পরিবারের কুরআন ও সুন্নাহকে পুন:রজ্জিবীত করা।


  • দিকে দিকে ইসলামকে ছড়িয়ে দিতে দাঈ গড়ে তোলা

পরিচালনায়

মুফতি জুবায়ের আহমাদ (হাফি:)

মুফতি জুবায়ের আহমাদ (হাফি:)

প্রিন্সিপাল ও প্রতিষ্ঠাতা

আরও জানুন
ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মারছুছ

ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মারছুছ

চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা

আরও জানুন