এই পোস্টটি কুরবানি সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর গুলো আইফতোয়া থেকে নেওয়া হয়েছে। আইফতোয়া ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত। আইফতোয়াতে যেসব প্রশ্ন করা হয় সেখান থেকে বাছাই করে কুরবানির উপর কিছু প্রশ্নোত্তর নিয়েই এই লেখাটি প্রকাশিত করা হয়েছে। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছেন মুফতি ইমদাদুল হক এবং মুফতি ওলী উল্লাহ।
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার কাছে যে স্বর্ন আছে,তার মূল্য ৬৬০০০ এর মত হতে পারে। বেতন বোনাস সহ আপনার হাতে ২২০০০ টাকা আছে। ৬৬০০০+২২০০০=৮৮০০০ টাকা। বর্তমান সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের প্রায় ৭৮০০০+ টাকা হয়, (এলাকা ভেদে কম বেশি হতে পারে) সুতরাং প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব।
তবে যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ এর আগেই যদি আপনার টাকা খরচ হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আপনার কাছে থাকা স্বর্ণের মূল্য ধরে যদি ৭৮০০০ টাকার কম হয়,সেক্ষেত্রে নেসাব পরিমান সম্পদ না থাকায় আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।
Mufti Oli Ullah, Ifta Department, Islamic Online Madrasah(IOM), IFatwa No.: 78752
ছোট প্রানী,যেমন ছাগল,ভেড়া,দুম্বা। এগুলোর ক্ষেত্রে কোনো শরীকানা কুরবানী চলবেনা। প্রানী বড়,যেমন গরু,উট, মহিষ। সেক্ষেত্রে তার মধ্যে সর্বোচ্চ সাত ভাগে কুরবানী দেয়া যাবে। কোনভাবেই ০৮ ভাগে কুরবানী দেয়া যাবেনা। ১.২.৩.৪.৫.৬.৭ যেকোনো ভাগ দেয়া যাবে।
Mufti Oli Ullah, Ifta Department, Islamic Online Madrasah(IOM), IFatwa No.: 78658
জ্বিলহজ মাসে নখ, চুল ইত্যাদি না কেটে কুরবানির পরে কাটলে কুরবনি দেওয়ার সমান সওয়াব হয়, এমন কথা কুরআন হাদীসে নেই। তবে কুরবানী দাতাদের জন্য হাদীসে জ্বিলহজ মাসের ১০ তারখ পর্যন্ত নক, চুল ইত্যাদি না কাটার নির্দেশ রয়েছে।
Mufti Oli Ullah, Ifta Department, Islamic Online Madrasah(IOM), IFatwa No.: 78658
আরো জানুনঃ- https://www.ifatwa.info/22444/
আপনার মামা এবং নানা উভয়ের উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে। বকরি দ্বারা কুরবানি দিলে দুইজনকে পৃথক পৃথকভাবে কুরবানি দিতে হবে। আর গরু দ্বারা কুরবানি দিলে একটি গরু দ্বারা সাতজনের ওয়াজিব যেহেতু আদায় হয়, তাই আপনার মামা নানা উভয়ের কুরবানিই আদায় হবে।
মুফতী ইমদাদুল হক, ইফতা বিভাগ, Islamic Online Madrasah(IOM), IFatwa No.: 78464
১. কোরবানী গরুর মধ্যে আকীকা দিলে ছেলের জন্য ২টা ভাগ দিতে হবে।
এক্ষেত্রে একটি ভাগ দিলেও যথেষ্ট হবে।২. সাথে বাবার নামে কুরবানী দেয়া বাধ্যতামুলক নয়। বাবার উপর কুরবানী ওয়াজিব হলে কুরবানী দিবে,নতুবা কুরবানী দেয়ার আবশ্যকীয়তা নেই।
৩. গরু মহিষের ক্ষেত্রে কুরবানীর ভাগের এর সাথে ১ জনের আকিকা দেওয়া যাবে।
তবে এখানে কুরবানীর ভাগ আলাদা হবে,আকীকার ভাগ আলাদা হবে। যেমন এক গরুতে সাতটি ভাগ করে দুইটি ভাগ আকীকা আর বাকি ৫ টি ভাগ কুরবানী,এমনটি করা যাবে। উল্লেখ্য, ছাগল ভেড়ার ক্ষেত্রে এমন শরীকে কুরবানী আকীকা দেয়া যাবেনা।৪. এক্ষেত্রে, সে যে কয়ভাগ কুরবানীর জন্য দিবে আর যে কয়ভাগ আকীকার জন্য দিবে,সেই নিয়ত মাথায় রাখবে,সেই নিয়তেই পশু ক্রয় করবে বা জবাই করবে। উল্লেখ্য, ছাগল ভেড়ার ক্ষেত্রে এমন শরীকে কুরবানী আকীকা দেয়া যাবেনা।
Mufti Oli Ullah, Ifta Department, Islamic Online Madrasah(IOM), IFatwa No.: 78362
একই গরুতে ৬ নামে কুরবানি ও ১ নামে আকিকা দেওয়া হলে তার গোশত বন্টন পদ্ধতিও কুরবানির মত। তথা ৭ ভাগের ১ ভাগকে তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের জন্য একভাগ যিয়াফত বা আত্মীয় স্বজনের জন্য এবং এক ভাগ গরীব মিসকিনদের জন্য। কুরবানির গোশত বন্টন করা মুস্তাহাব আর আকিকার গোশতকে রান্না করে আত্মীয় স্বজনকে আহার করানো মুস্তাহাব।
মুফতী ইমদাদুল হক, ইফতা বিভাগ, Islamic Online Madrasah(IOM), IFatwa No.: 78513
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যার সামর্থ্য আছে তবুও সে কুরবানি করল না (অর্থাৎ কুরবানি করার সংকল্প তার নেই) সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে।’ (মুসনাদে আহমদ, মুসতাদরেকে হাকেম)
কুরবানি দেওয়া ওয়াজিব। আর ওয়াজিব তরক করা কবিরাহ বা বড় গোনাহ। সম্পদশালী ব্যক্তি যদি কুরবানি হুকুম পালন না করে তবে বড় গোনাহগার হবে।
কুরবানীর তিন দিন পার হয়ে গেলে কুরবানী দেয়ার মতো টাকা তথা একটি ছাগল ক্রয় পরিমান টাকা গরিব মিসকিনকে দান করে দেয়া আবশ্যক হবে।
Mufti Oli Ullah, Ifta Department, Islamic Online Madrasah(IOM), IFatwa No.: 48694
তাছাড়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরবানি করা থেকে বিরত থাকা ব্যক্তিকে অভিসম্পাত করে বলেন যে, সে যেন ঈদগাহে না আসে। তাই কুরবানি করার মতো টাকা বা সম্পদের মালিক ব্যক্তির জন্য কুরবানি করা ওয়াজিব। যার ওপর কুরবানি ওয়াজিব সে যেন তা পালন করার মাধ্যমে ওয়াজিব তরক করার গোনাহ থেকে নিজেকে বিরত রাখে।
আপনার নিকট যেই গহণা রয়েছে, সেই গহণা বিক্রি করে যদি কুরবানির পশু ক্রয় করা যায়, তাহলে জমানো টাকা ঋণ দেয়ার পরও আপনার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে।তবে যদি আপনার নিকট থাকা গহেনা বিক্রি করে কুরবানি সম্ভবপর না হয় ,তাছাড়া কুরবানির দিন সমূহে উক্ত ঋণ ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাও না থাকে, তাহলে আপনার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে না।
মুফতী ইমদাদুল হক, ইফতা বিভাগ, Islamic Online Madrasah(IOM), IFatwa No.: 77617
আপনার ভাসুর যদি ব্যাংকের সুদী সেক্টরে চাকুরী করে থাকেন, তাহলে উনার সাথে কুরবানি করলে, আপনাদের কুরবানি-ই আদায় হবে না। তাই আপনারা পৃথক পৃথক বকরি কুরবানি দিয়ে দিবেন।
আপনাদের সংসার পরিচালনাতে যেহেতু হালাল হারামের মিশ্রিণ রয়েছে। ঐ টাকা থেকে আপনার এবং আপনার স্বামী বাবৎ যত খরচ হবে, যদি অনুমান হয় যে, আপনার স্বামীর প্রদত্ব টাকা বা তার চেয়ে কম আপনাদের উভয়ের বেলায় খরচ হয়েছে।তাহলে আপনাদেরকে আর কোনো সদকাহ করতে হবে না। যেমন ধরুণ- আপনার স্বামী মাসে ৫হাজার টাকা সংসারে দেন। সংসারের মাসিক খরচ ১০ হাজার।পরিবারে সদস্য চারজন। তাহলে আপনাদের জন্য অতিরিক্ত কিছুই সদকাহ করতে হবে না।তবে যদি সংসারের খরচ হয় ১৫ হাজার। আর আপনার স্বামী প্রতি মাসে ৫ হাজার দেন,তাহলে আপনাদেরকে আরো ২.৫ হাজার সদকাহ করতে হবে। এভাবে হিসাব করে সদকাহ করতে হবে।
আপনাদের জন্য সহজ সমাধান হল, পৃথক হয়ে যাওয়া।আল্লাহ আমাদের সবাইকে উত্তম প্রতিদান করুক।
মুফতী ইমদাদুল হক, ইফতা বিভাগ, Islamic Online Madrasah(IOM), IFatwa No.: 48890
মহিলাদের উপর কুরবানি ওয়াজিব হলে, তার হয়ে তার মাহরামরাও কুরবানি দিতে পারবে। এক্ষেত্রে তার অনুমতি নিতে হব। আবার মহিলা নিজের তরফ থেকেও দিতে পারবে।
মুফতী ইমদাদুল হক, ইফতা বিভাগ, Islamic Online Madrasah(IOM), IFatwa No.: 48347
আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নটি এখানে খুঁজে না পেলে আইফতোয়াতে প্রশ্ন করতে পারেন। ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যেই একজন বিজ্ঞ মুফতি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিবেন – ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্ন করতে এখানে ক্লিক করুন